মো.আরফাত হোসাইন, রাউজান, চট্টগ্রামঃ চট্টগ্রামের রাউজানে টিনের চালের সাথে আটকে যাওয়া ক্রিকেট বল নিতে গিয়ে বিদ্যুৎ স্পর্শে গুরুতর আহত হওয়ার পাঁচদিন পর আরিফুল ইসলাম রিফাতের (১৫) মৃত্যু হয়েছে।
পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে গতকাল শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাত ১১টায় ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে তার মৃত্যু হয়। নিহত আরিফুল ইসলাম রিফাত রাউজান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছিটিয়াপাড়া এলাকার দিনমজুর মো. ইউনুসের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গত ১৪ ই মার্চ রবিবার সকালে বাড়ির পাশ্বস্থ মাঠে রিফাতসহ তার বন্ধুরা ক্রিকেট খেলে। খেলার এক পর্যায়ে ক্রিকেট বল মাঠের পশ্চিমে থাকা মিয়া কলোনির টিনের চালে আটকে যায়। এসময় রিফাত টিনের চালে আটকে যাওয়া বল নিতে গেলে টিনের ঠিক উপরে থাকা ৩ টি কারেন্ট তারের (১১ হাজার ভোল্টেজ) একটিতে বিদ্যুতায়িত হয়। মুহুর্তেই রিফাতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। অজ্ঞান হয়ে টিনের চালে কাতরাতে থাকে রিফাত।
এসময় তার সঙ্গীরা কোন রকমে টিনের চাল থেকে নামিয়ে উপজেলার গহিরাস্থ জেকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক রিফাতকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। দ্রুত সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনদিন সেখানে ভর্তি থেকে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন ডাক্তারের সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে অবশেষে গতকাল রাত ১১ টায় মারা যায় রিফাত।
স্থানীয়রা আরও জানান, নিহত রিফাতের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় সামাজিক সংগঠন নীল আকাশ যুব ক্লাব, সিকদার বাড়ি শান্তি সংঘ সহ এলাকাবাসীর সহযোগীতায় রিফাতের চিকিৎসা চলে।
নিহত রিফাত পরিবারের দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে সবার বড়। পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছতার কারণে দ্বিতীয় শেণীতেই শেষ হয় তার পড়াশোনা।
এদিকে যে মিয়া কলোনির টিনের চালে রিফাত বিদ্যুতায়িত হয় সে কলোনির মালিকপক্ষের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের। কলোনির টিনের চালের সাথে একেবারে লাগানো ১১ হাজার ভোল্টের কারেন্ট তার সরানোর জন্যে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এ আবেদন করেছেন উল্লেখ করে মালিকপক্ষের মো. তাসিন জানান, আমরা গত ৩ মাস আগে আবেদন করেছি। কিন্তু, কারেন্ট তার এখনও সরানো হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর পরিচালনা কমিটির সভাপতি তসলিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ছেলেটা মারা যাবার কথা ফেসবুকে দেখেছি। আপনি এ বিষয়ে জেনারেল ম্যানেজারের (জিএম) সাথে কথা বলুন। এর একঘন্টা পর তিনি প্রতিবেদককে ফোন করে জানান, আপনি ফোন দেয়ার পরে আমি ঘটনাস্থলে এসেছি। প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারিনি। আমরা বেশ কিছুদিন আগে এখানে নতুন খুঁটি বসানোর উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু পাশের জমির মালিক তাদের জমিতে খুঁটি বসাতে দেননি। তারা কাজ করতে না দিলে আমরা কি করতে পারি।
এবিষয়ে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। তিনি আরও বলেন, রিফাত নামে যে একজন ছেলে আহত হয়ে পাঁচদিন পর মারা গেছেন সেটাও তাদের কেউ জানাননি।
#SmileNews #HA